click on images to know more about the Images
হরিচরণ জন্ম থেকেই একটু খ্যাপাটে,
যখন তখন যা তা কথা বলে অকপটে ।
সম্প্রতি এই রবিবারে মা মারা যান তার,
খ্যাপা ছেলের যত্ন নেবার নাই কেউ আর।
নিরন্নে দিন-রাত তাই ভেসে নয়ন জলে,
' আমায় ছেড়ে পালালি মা!' আপন মনে বলে ।
খ্যাপা ছেলের কাণ্ড দেখে, ঠাকুর মশাই স্নেহে
কাছে ডেকে বলেন তারে --"হরি,কাঁদিসনি হে,
মা তোর যে পূণ্যবতী,গেছেন স্বর্গে চলে ।
এমনি সবার যেতে হয় কর্ম শেষ হলে ।
দাদা যে তোর মহামতি মধুসূদন দাস,
লক্ষ টাকা খরচে মার পাঠান স্বর্গবাস।
সেথা মা তোর সুখেই আছে, কাঁদিস না আর,
কর্ম শেষে যেতে হবে আমাদেরও সবার।"
এসব শুনে খানিক ভেবে হরিচরণ বলে,--
' একটু বসো ঠাকুর মশাই,যেওনাকো চলে ।'
ছুট্টে গিয়ে ঘরের থেকে নিয়ে এসে ফোন,
বলে, --' মায়ের সাথে কথা বলতে চায় মন।
স্বর্গতে মা কেমন আছে, নিজের কানে শুনি,
সেথা সুখের বহর কেমন, মার থেকে জানি।
কর্ম শেষে আমারও তো যেতেই হবে তথা,
তার জন্য এখন থেকেই বলে রাখি কথা ।
দাও গো ঠাকুর তুমি স্বর্গের ফোন নম্বর,
মার সঙ্গে কথা বলে মোর জুড়াই অন্তর।'
ঠাকুর মশাই হেসে বলে,--" এ যে পাগল আছে,
স্বর্গের ফোন নম্বর হয়? জান সবার কাছে ।"
হরিচরণ আছাড় খায় ঠাকুরের পায়,--
' ছাড়বো না ঠাকুর তোমার, না দিলে উপায় ।
স্বর্গে পাঠাও তুমি ঠাকুর, শ্রাদ্ধ নামের আড়ে,
হাজার হাজার টাকা লোঠো, ফর্দ চেইপে ঘাড়ে ।
যুগ ও সময় অনেকখানি পাল্টে গেছে আজ,
ফোন নম্বর না রেখে কি চলছে স্বর্গের কাজ!
তোমরা কেবল মুণ্ডু মুড়ে টাকা নিতে থাকো,
স্বর্গের ফোন নম্বর কেন জেনে নাই রাকো?
ও সব ছেঁদো কথায় আমি ভুলছিনা ভাই,
স্বর্গের ফোন নম্বর আমার এখন চাই ।'