click on images to know more about the Images

কাটি বামুনের বউ(অনুগল্প)

Author: কুমকুম নাইয়া

প্রায় একশত বছর আগের কথা! 

মরিশ্বরের রায় নস্কররা হাজার বিঘে জমির মালিক। সামাজিক প্রেক্ষাপট বদলে র সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্যদের মত তারাও বৈদিকক্রিয়া কলাপ পালনের জন্য বাইরে থেকে ব্রাম্মন এনে, তাদের ভরনপোষনের ভার বহন করতে শুরু করল। 

 

খগেন্দ্রনাথ তেমন ই একজন কূল পুরোহিত। শোনা যায় তাঁর পিতা কে কোথা থেকে যেন এনেছিল রায়নস্কররা।তারপর পিতার মৃত্যুর পর খগেন্দ্রনাথ ই এখন কূল পুরোহিত। 

 

রায় নস্করদের বড় গিন্নি বিলাসমনি প্রায় ঘুরে যেতেন খগেন্দ্রনাথের বাড়ি। উদ্দশ্য গ্রামে একটিমাত্র ব্রাম্মন পরিবার, তাদের সুবিধা অসুবিধা দেখতে আসা আর কোন সমস্যা হলে সমাধান করা। 

 

সেদিন খগেন্দ্রনাথের বাড়িতে তার ব্রাহ্মণীর সঙ্গে গল্প করতে এসে ছিলেন বিলাসমনি , নানান গল্পের পর যেই বাড়ির পথে রওনা দিলেন তখনই, খেয়াল করলেন, তার চলাচলের পথে গোবর জল ছিটিয়ে, তার বসা পিঁড়িটা তাড়াতাড়ি করে পুকুর ঘাটে ধুইতে যাচ্ছে ব্রাম্মণী।

 

বিলাসমনি ভূস্বামী মহেন্দ্রনাথ রায় নস্করের স্ত্রী।খগেন্দ্রনাথকে এই গ্রামে জন্ম গ্রহণ করতে দেখেছেন । এবং ছেলেবেলার ডাকনাম 'কাঁটি' নামেই ডাকতেন তাকে। অত্যন্ত গম্ভীর গলায় নাতির বয়সী কুলোপুরোহিতকে ডেকে বললেন, -" হ্যাঁ রে কাঁটি!আমার শ্বশুর তোর বাবাকে এখানে এনে জমি দিয়ে বাস করতে দিল।আমাদের অন্নে তোরা প্রতি পালিত। আর শুধুমাত্র তোদের পিঁড়েতে বসেছি বলে তোর বউ পুকুরে পিঁড়ে ধুইতে ছুটলো! "

 

বাড়িতেই ছিলেন কাঁটি বামুন। ভূস্বামী গৃহিণী রুষ্ট হয়েছেন বুঝে মিন মিন করে বললেন, -"কি বলবো ঠাকুরমা! ও একটু ওইরকম! "

 

উচ্চকন্ঠে ভূস্বামী গৃহিণী আশেপাশের সবাই কে শুনিয়ে ই বললেন, -" কিসের এত জাতঘেন্না ওর? ও নিজেই তো একজন শূদ্রানী। নারী মাত্রেই শূদ্রানী! "