click on images to know more about the Images

পৈতেধারী অহংকারকে

Author: দিলীপ বিশ্বাস

যে-কৃষক অবিরল নোনতা ঘাম ঝরিয়ে ফসল ফলায়;
নুব্জ কাঁধে বয়ে আনে বোঝা,
রাশি রাশি ফসলের স্তূপ
বালির বাধের মতো জমে তাঁর খামারে।
তবুও কেন তাঁর বক্ষ-পঞ্জর জেগে ওঠে
শেষ হেমন্তের পল্লি নদীর চড়ার মতো?

হ্যাঁ, মন্দিরের উপবীতধারী সেবায়েত,
আপনাকেই এ প্রশ্ন।
যত দূর জানি, আপনার তো ভিক্ষার অন্নে
দিন গুজরান হয়!
বলতে পারেন তবুও কেন এত নধর ও মসৃণ
আপনার স্ফীতোদর?

যেখানে শত সহস্র অনাহার ক্লিষ্ট শিশু
লেলিহান ক্ষুধার আগুনে ধিকি ধিকি জ্বলছে!
আর আপনি? অহর্নিশ নিরত মূক-বধির নির্জীব প্রস্তর-পুত্তলিকা পরিষেবায়!
কেন পুষ্পে পত্রে জীবনের মহার্ঘ্য সম্পদের এই নিরেট জলাঞ্জলি?

আপনার ওই মিচকে প্রতারণার ফাঁদ না পেতে
বরং মাঠে দু-মুঠো দানা ফেলুন।
তাতে ক্ষুধার্ত শিশুগুলির পেটের আগুন নিভবে।

আর আপনার ওই অহংকারী পৈতের কী প্রয়োজন বলতে পারেন?
যা অকারণ আপনার সঙ্গে অন্যের বিভেদ সৃষ্টি করবে!
বরং পৈতের সুতো দিয়ে  হোক না
লজ্জা ও শীত নিবারণের অমূল্য বস্ত্র।
চেয়ে দেখুন, কত উলঙ্গ ও অর্ধউলঙ্গ শিশু এখনো পরিব্যাপ্ত আপনার চারিদিক। 
মিথ্যে জাত্যভিমানের ফানুসে আর নাই বা উড়লেন!
অন্ধ দুটো চোখ মেলে তাকাতে পারলে দেখবেন,
যারা আছে মাটির কাছাকাছি,
তারা মানুষকে ভালোবেসে, দেশকে ভালোবেসে
এখনো অচ্ছুৎ, ছোটোজাত!
আর আপনি কেবল নিজেকেই ভালবেসে আপনি শ্রেষ্ঠ?
তাহলে  আপনি এখন থেকে মূর্খের স্বর্গে থাকবেন।

অনেক হয়েছে বন্ধু [হ্যাঁ, এখনো বন্ধুই বলছি]
সেই শ্রমজীবী কৃষক, বস্তির মজুর, ভারতবর্ষের শত সহস্র
তথাকথিত দলিত মানুষকে আর আপনার অবজ্ঞার
আগুনে দগ্ধ করতে পারবেন না।
বরং তাদের এক এক পিক থুথু নিক্ষেপে সৃষ্টি হবে অতল সমুদ্র।
সেখানেই আপনার অহঙ্কারের হবে সলিল-সমাধি।